যে কারণে রোযা ভঙ্গ হয় না

১। রোযাবস্থায় রোযার কথা ভুলে গিয়ে ইচ্ছা মতো পানাহার করলেও রোযা ভঙ্গ হয় না। (বোখারী শরীফ)

عنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِذَا نَسِيَ فَأَكَلَ وَشَرِبَ فَلْيُتِمَّ صَوْمَهُ فَإِنَّمَا◊ أَطْعَمَهُ اللَّهُ وَسَقَاهُ [صححَ البخاری:1933]

حضرت ابو ہریرہ رضی اللہ عنہ سے روایت ہے کہ نبی ﷺ نے فرمایا: اگر کوئی شخص بھول کر کھا پی لے تو وہ اپنے روزے کو پورا کرے کوونکہ اللہ نے اس کو کھلایا اور پلایا ہے۔

فإن اکل الصائم او شرب او جامع ناسیا لم یفطر ۔ (مختصر القدوری : ص ٨٦)
اگر روزہ دار بھول کر کچھ کھالیوے تو اسکا رزہ نہیں گیا۔
(بہشتی زیور :٣/٢٠٤)

২। রোযাবস্থায় চোখে ড্রপ, সুরমা বা মলম ইত্যাদি ব্যবহার করলে রোযা ভঙ্গ হয় না। যদিও এগুলোর স্বাদ গলায় উপলব্ধি হয়। কারণ এবিষয়টি হাদীস শরীফ ও ফিকাহ শাস্ত্রের মূলনীতি দ্বারা প্রমাণিত। (বোখারী শরীফ)

وَقَالَ ابْنُ مَسْعُودٍ إِذَا كَانَ صَوْمُ أَحَدِكُمْ فَلْيُصْبِحْ دَهِينًا مُتَرَجِّلًا …. وَلَمْ يَرَ أَنَسٌ وَالْحَسَنُ وَإِبْرَاهِيمُ بِالْكُحْلِ لِلصَّائِمِ بَأْسًا [صحیح البخاری قبل حدیث:1930]

حضرت عبد اللہ بن مسعود کہتے ہیں کہ جب تم میں سے کوئی روزے کی حالت میں ہو تو وہ تیل لگا سکتا ہے اور کنگھی بھی کر سکتا ہے۔

حضرت انس رضی اللہ عنہ، حسن بصری اور ابراہیم نخعی روزے دار کے لیے سرمہ لگانے میں کوئی حرج محسوس نہیں کرتے تھے۔

اذا ادھن او احتجم او اکتحل لم یفطر ۔ ( مختصر القدوری : ص ٨٧)

دن کو سرمہ لگانا تیل لگانا درست ہے اس سے روزہ میں کوئی نقصان نہیں آئیگا۔ (بہشتی زیور :٣/٣٠٥)

৩। ডায়াবেটিস রোগী রোযাবস্থায় ইনসুলিন ব্যবহার করলে রোযা ভঙ্গ হয় না।

روزہ کی حالت میں انسولین لگانا جائز ہے تو اس اسے کوئی نقصان نہیں ہوگا۔
قال فی النہر لان الموجود فی حلقہ اثر داخل من المنام الذی ھو خلل البدن والمفطر انماھو الداخل من المناقد للاتفاق علی ان من اغتسل فی ماء فوجدہ بردہ فی باطنہ انہ لایفطر ۔
(الدرالمحتار علی الرد المختار : ٢/٣٩٥)

৪। রোযাবস্থায় কানের মধ্যে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় পানি প্রবেশ করলে রোযা ভঙ্গ হয় না। কারণ, পানি ভিতরে প্রবেশ করতে না পারে মতো মহান আল্লাহ তা’আলা কানের ভিতরভাগে পর্দা ফিট করে দিয়েছেন। হ্যাঁ, কোন কারণে পর্দা যদি ফেটে যায় তখন রোযা ভেঙ্গে যাবে।

کتب فقہ میں مذکور ہےکہ کان میں پانی داخل ہونےسے روزہ فاسدنہیں ہوتا البتہ قصدا کان میں پانی ڈالنا مکروہ ہےاس صورت میں فقہاء کے درمیان فساد وعدم فساد میں اختلاف ہے مگر مفتی بہ قول عدم فساد کا ہے۔ (ولو ا لجیہ :1/218 بحوالہ جواہر الفتاوی : ٥/٤٣٣)

৫। রোযাবস্থায় শরীরে রক্ত নিলে অথবা নিজ শরীর থেকে কাউকে রক্ত দিলে রোযা ভঙ্গ হয় না।

١) روزہ کی حالت میں بذریعۂ انجکشن خون نکالنا مفسدنہیں ہے۔
(احسن الفتاوی : ٤/٤٢٥)

٢) اگر کسی نے روزہ کی حالت میں جان بوجھ کر خون دینے سے روزہ نہیں ٹوٹتا ہے۔ ( آپ کے مسائل اور انکا حل : ٣/٢٨٩)

৬। রোযাবস্থায় যে কোন প্রকারের ইনজেকশন কিংবা ইনজেকশনের মাধ্যমে স্যালাইন গ্রহণ করলে রোযা ভঙ্গ হয় না।

انجکشن سے روزہ نہیں ٹوٹتاہے۔
(جواہر الفتاوی : ٥/٤٣٧، فتاوی درا لعلوم : ٦/٤٠٨، کتاب الفتاوی :٣/٣٩١)

৭। রোযাবস্থায় নারী-পুরুষে প্রস্রাবের রাস্তায় ওষুধ ইত্যাদি ব্যবহার করলে রোযা ভঙ্গ হয় না। কারণ আধুনিক ডাক্তারী রিপোর্ট মতে সেখান থেকে এমন কোন স্থানে তা পৌঁছেনা যেখানে পৌঁছলে রোযা ভেঙ্গে যায়। তবে মহিলাগণ দিনের বেলায় একাজ না করাই উত্তম।

جدید طبی تحقیق کے مطابق چونکہ عورت کی شرمگاہ اور معدہ اور آنتوں کے درمیان راستہ نہیں ہے اس لیے خواتین کے شرمگاہ میں دوائی رکھنے سے روزہ نہیں ٹوٹے گا تاہم عورت دوادن میں نہ رکھے ،رات کو رکھے توزیادہا حتیاط کی بات ہے اور اگر دن میں رکھ لے تو یہ بہتر ہے ۔
(95دار الافتاء دار العلوم کراچی بحوالۂ ضابطۃ المفطرات : ص )

৮। রোযাবস্থায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য উপরে নিচের কোন রাস্তা দিয়ে ওষুধবিহীন শুধু পাইপ ঢুকালে রোযা ভঙ্গ হয় না।

آج کل معدہ کے بعض امراض کی شناخت کے لئے معدہ تک منہ کے زریعہ نلکی پہنچائی جاتی ہے جوبعض دفعہ گوشت کا ٹکڑا کتراکر اپنے ساتھ لاتی ہے اور اس پر تحقیق ہوتی ہے، ایسی صورت میں اس شخص کا روزہ نہیں ٹوٹے گا۔ (جدید فقہی مسائل :1/186)
٢) اور اگر خشک نلکی ڈالی جائے تو روزہ فاسد نہ ہوگا۔
(6/369کتاب النوازل )

৯। রোযাবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে রোযা ভঙ্গ হয় না। তবে যত দ্রুত সম্ভব কুলি ও নাকে পানি দেওয়াসহ সমস্ত শরীর ধৌত করে পবিত্র হওয়ার চেষ্টা করা উচিৎ।

احتلام سے روزہ نہیں ٹوٹتاہے۔
(3/396فتاوی محمودیہ : 10/180، کتاب الفتاوی )

১০। রোযাবস্থায় রক্ত পরীক্ষার জন্য শরীর থেকে রক্ত বের করলে রোযা ভঙ্গ হয় না।

روزہ کی حالت میں بذریعۂ انجکشن خون نکالنا مفسدنہیں ہے۔
(4/425: احسن الفتاوی  )

১১। রোযাবস্থা অনিচ্ছাকৃত যে কোন পরিমাণের বমি আসলে রোযা ভঙ্গ হয় না।

قئی اگرخودسے آئے تو روزہ نہیں ٹوٹتاہے۔
(3/289آپکے مسائل اور انکا حل )

১২। রোযাবস্থায় এনজিওগ্রাম করালে রোযা ভঙ্গ হয় না। কারণ উরুর গোড়ার থেকে একটি বিশেষ রগের ভিতর দিয়ে ক্যাথেটার ঢুকিয়ে বিশেষ পদ্ধতির পরীক্ষা করাকে এনজিওগ্রাম বলা হয়। যেহেতু রোযা ভঙ্গের গ্রহণযোগ্য কোন পথ দিয়ে তা প্রবেশ করেনি সেহেতু উক্ত ক্যাথেটারে ওষুধ লাগানো থাকলেও রোযা বঙ্গ হবে না।

١) ومایدخل من مسام البدن من الدھن لایفطر۔
(  1/203عالمگیریہ  )
٢) والمفطر انماھو الداخل من المنافذ ۔ (ردالمحتار :3/367 )

১৩। রোযাবস্থায় গলায় অনিচ্ছাকৃত ধোয়া, ধুলা-বালি বা মশা-মাছি ইত্যাদি প্রবেশ করলে রোযা ভঙ্গ হয় না।

روزہ کی حالت میں حلق کے اندر مکھی، مچھر گرد وغبار چلاجانےسے رورزہ نہیں ٹوٹتاہے۔

(3/11عالمگیری :،/1/298 بہشتی زیور )

১৪। রোযাবস্থায় হিজামাহ করলে রোযা ভঙ্গ হয় না।

اذا ادھن او احتجم او اکتحل لم یفطر ۔ ( مختصر القدوری : ص 87)

—————————
সংকলনে
মুহাম্মদ কিফায়তুল্লাহ শফিক
খাদিমে দারুল ইফতা
আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া
টেকনাফ, কক্সবাজার, বাংলাদেশ