রোযা কি ও কেন ?
রোযার আরবী শব্দ সাওম। সাওম শব্দের আভিধানিক অর্থ বিরত থাকা। রোযা রাখার নিয়তে সুবহে সাদিক থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ে সর্বপ্রকার পানাহার ও স্ত্রী মিলন থেকে বিরত থাকার নাম রোযা কিংবা সাওম।
২য় হিজরীর শা’বান মাসে রমাযানুল মুবারকের পূর্ণ একমাস ব্যাপী রোযা রাখা ফরয করা হয়েছে।
মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন, হে মুমিনগণ! তোমাদের উপর (রমাযান মাসের) রোযা ফরয করা হয়েছে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরয করা হয়েছিল। -সূরা বাক্বারাঃ ১৮৩
মহান আল্লাহ তা’আলা অন্য আয়াতে বলেন, সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তিই এ (রমাযান) মাস পাবে, সে যেন এ সময় অবশ্যই রোযা রাখে। আর তোমাদের মধ্যে কেউ যদি অসুস্থ হয় বা সফরে থাকে, তবে অন্য দিনে সে সমান সংখ্যা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের পক্ষে যা সহজ সেটাই চান, তোমাদের জন্য জটিলতা চান না, এবং (তিনি চান) যাতে তোমরা রোযার সংখ্যা পূরণ করে নাও এবং আল্লাহ তোমাদেরকে যে পথ দেখিয়েছেন, সেজন্য আল্লাহর তাকবীর পাঠ কর এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। -সূরা বাক্বারাঃ ১৮৫
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সহিত ছাওয়াবের আশায় রমাযান শরীফের রোযা রাখে, (অন্য রিওয়াতে) ঈমানের সহিত ছওয়াবের আশায় রমাযান শরীফে রাত্রিকালীন ইবাদত অর্থাৎ তারাবীহের নামায পড়ে, তার অতীতের সমস্ত গুনাহ্ মা’ফ করে দেওয়া হয়। -বুখারী শরীফ
রোযার নিয়ত
ফরয কিংবা নফল রোযা সহিহ হওয়ার জন্য যথাসময়ে নিয়ত করা ফরয ও অপরিহার্য শর্ত। বিনা নিয়তে সারাদিন রিবত থাকলে রোযা হয় না। মনে মনে সিদ্ধান্ত নেওয়াকে নিয়ত বলা হয়। নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা জরুরী নয়। আরবীতে উচ্চারণ করাও জরুরী নয়। যে কোন ভাষায় নিয়ত উচ্চারণ করা যায়। তবে নিয়ত করার পাশাপাশি মুখেও তা উচ্চারণ করা উত্তম।
নিয়ত এভাবে করা যেতে পারে, আমি আজ নির্ধারিত রোযা রাখার নিয়ত / সিদ্ধান্ত করলাম।
সূর্যাস্তের পর থেকে পরবর্তী সুবহে সাদিক ও সূর্যাস্তের মধ্যবর্তী সময়ের আগ পর্যন্ত অর্থাৎ প্রায় সকাল ১১ টার আগ পর্যন্ত রোযার নিয়ত করার অবকাশ আছে।
(বাদায়েউস সানায়ে : ২/২২৯, আল-বাহরুর রায়েক : ২/২৪৯)
রোযার জন্য সাহরী খেলেও রোযার নিয়ত হয়ে যায়। ইসলাম ধর্মে শুধু সাহরী খাওয়াকে রোযার নিয়ত হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
(আল-বাহরুর রায়েক : ২/২৫৯, ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ১/১৯৫)
সাহরী খাওয়ার নিয়ম
রোযা রাখার উদ্দেশ্যে রাতের শেষভাগে সুবহে সাদিকের আগে যে খাবার গ্রহণ করা হয় তাকে সাহরী বলা হয়। রোযাদারের জন্য সাহরী খাওয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নাত। পেট ভরে খাওয়া জরুরী নয়। অতএব দু, এক লুকমা খাবার খাওয়া কিংবা দু’ একটি খেজুর খেয়ে নিলে অথবা এক ঢুক পানি পান করলে সাহরীর সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে। যারা সাহরী খায় তাদের উপর আল্লাহ তা’আলা রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতারা তাদের জন্য রহমতের দু’আ করেন।
(মুসনাদে আহমদ, মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা, সহীহ ইবনে হিব্বান)
পেটে ক্ষুধা থাকুক বা না থাকুক সাহরী বর্জন মোটেই উচিত নয়। খাওয়ার চাহিদা একেবারেই যদি না থাকে তাহলেও ঘুম থেকে উঠে সামান্য হলেও কিছু খেয়ে নেওয়া উচিত। এর দ্বারা একদিকে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নাতের উপর আমল হবে অপর দিকে হাদীস শরীফে বর্ণিত বরকত ও রহমত পাওয়া যাবে।
বিলম্ব করে সাহরী খাওয়া নবীজি সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নাত। অর্থাৎ রাতের একেবারে শেষভাগে সুবহে সাদিকের আগ মুহূর্তে সাহরী খাওয়া সুন্নাত।
সাহরীর সর্বশেষ সময় হলো সুবহে সাদিকের আগ পর্যন্ত। অতএব, আযানের সময় পর্যন্ত সাহরী খেতে থাকলে অর্থাৎ সুবহে সাদিকের পরে সাহরী খেলে রোযা হবে না।
ইফতার করার নিয়ম
ইফতার আরবী শব্দ। ইসলামী পরিভাষায় মুমিন নর-নারী সারাদিন রোযা রেখে সূর্যাস্তের পর পর যে খাবার গ্রহণ করেন তাকে ইফতার বলা হয়।
অন্যান্য দু’আর পাশাপাশি বিসমিল্লাহ বলে ইফতার করবে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন কেউ ইফতার করবে তখন সে যেন বলে-
اللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَعَلَى رِزْقِكَ أَفْطَرْتُ
অর্থ : “আয় আল্লাহ! আমি আপনার জন্যই রোযা রেখেছি এবং আপনার দেওয়া রিযিক দ্বারা ইফতার করেছি।”
(আবূ দাউদ শরীফ)
হযরত আনাস বিন মালিক রা. সূত্রে বর্ণিত : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি খেজুর পাবে সে যেন খেজুর দ্বারা ইফতার করে। যে ব্যক্তি খেজুর পাবে না সে যেন পানি দ্বারা ইফতার করে। (নাসাঈ শরীফ)
রোযার কাফ্ফারা
রোযা স্মরণ থাকা অবস্থায় স্বেচ্ছায় কোন কিছু খাওয়া বা পান করা অথবা যৌন সঙ্গম করা। এতে কাজা ও কাফ্ফারা উভয়টি ওয়াজিব হয়। রোযার কাফ্ফারা হচ্ছে একটানা ষাট (৬০) দিন রোযা রাখা মধ্যখানে কোন কারনে বিরতি হলে আবার নতুনভাবে ৬০ রোযা আদায় করতে হয়।
যে কারণে রোযা ভঙ্গ হয়
১। রোযা স্মরণ থাকাবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে মুখ দিয়ে কোন পানীয় কিংবা খাদ্যবস্তু গলদেশে প্রবেশ করালে রোযা ভঙ্গ হয়। এতে কাযা ও কাফ্ফারা উভয়টি ওয়াজিব। অনিচ্ছায় প্রবেশ করলে শুধু কাযা ওয়াজিব।
اگرکسی نے رمضان کے روزہ میں کوئی غذا یا دوا قصدا کھائی یا پی لی تو اسکا روزہ فاسد ہوجائےگا، اسپر قضاء اور کفارہ دونوں واجب ہے۔ مالابدمنہ :ص 53)
اگر روزہ یادتھا اور غلطی سے کچھ کھا لیا یا پی لیا تو روزہ ٹوٹ جائے گا اور صرف قضاء لازم ہے، کفارہ نہیں ہے۔ دار الافتاء دار العلوم کراچی بحوالۂ فتاوی ہندیہ 202/1
২। স্বপ্নদোষ ব্যতীত স্ত্রী মিলন বা অন্য কোন উপায়ে রোযা স্বরণ থাকাবস্থায় স্বীয় বীর্য বের করলে রোযা ভঙ্গ হয়। এতে কোন কোন ক্ষেত্রে কাযা ও কাফ্ফারা উভয়টি ওয়াজিব হয়।
নিচে আরবী উর্দুতে বিস্তারিত দেওয়া আছে।
زنا : وان جامع المكلف آدميا مشتهى فى رمضان او جامع او توارت الخشفۃ فى احد السبيلين قضى وكفر. شامي : 409/2
لواطت :لواطت سے قضاء وکفارہ دونوں لازم ہوتے ہیں۔ فتاوی دار العلوم دیوبند :432/6
استمناء بالید :استمناء بالید میں قضاء ہے کفارہ نہیں۔ خیر الفتاوی : 60/4، احسن الفتاوی : 445/4 ، جواہر الفتاوی 436/5
وطی بالبھیمۃ :او انزل بوطئ میتۃ او بھیمۃ قضی ولاكفارة لہ ۔ (نور الایضاح : ص 80 کنزالدقائق :ص 90
৩। রোযাবস্থায় ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় পায়খানার রাস্তা দিয়ে পানীয় কিংবা খাদ্যজাতীয় বস্তু প্রবেশ করলে রোযা ভঙ্গ হয়। এতে শুধু কাযা ওয়াজিব হয়।
پیچھے کے راستہ سے داخل کی گئی چیزاگر موقع حقنہ سے آگے بڑھ جائے تو روزہ ٹوٹ جاتاہے۔ کتاب النوازل 383/2
جو دواء کان یا ناک وغیرہ کے راستے سے معدہ میں پہنچے اس کی وجہ سے صرف روزہ فاسد ہوتاہے، کفارہ واجب نہیں ہوتاہے۔دار الافتاء دار العلوم کراچی بحوالۂ رد المحتار: 402/2
৪। নাকে নস্য, ড্রপ কিংবা পানি ইত্যাদি দিয়ে ভিতরে টেনে নিলে রোযা ভঙ্গ হয়। এতে শুধু কাযা ওয়াজিব।
ناک اور کان میں دوا ڈالنے سے روزہ ٹوٹ جاتاہے۔ امداد الفتاوی : 129/1 ، جدید فقہی مسائل187/1
ناک اور کان میں دوائی ڈالنے سے روزہ فاسد ہوجاتاہے۔ آپکے مسائل اور انکا حل 286/3
جو دواء کان یا ناک وغیرہ کے راستے سے معدہ میں پہنچے اس کی وجہ سے صرف روزہ فاسد ہوتاہے، کفارہ واجب نہیں ہوتاہے۔دار الافتاء دار العلوم کراچی بحوالۂ رد المحتار: 402/2
৫। রোযাবস্থায় ওষুধমিশ্রিত অক্সিজেন ব্যবহার করলে রোযা ভঙ্গ হয়। এতে শুধু কাযা ওয়াজিব হয়। তবে ওষুধবিহীন শুধু বাতাস প্রবেশ করালে রোযা ভঙ্গ হয় না।
ہوا منہ کے اندر سے بھی روزہ فاسد نہیں ہوتا اگرچہ یمپ سے پہونچا ئی جائے ، البتہ آج کل کے جو یمپ استعمال ہوتاہے اس میں دوا کے اجزاء ہوتے ہیں اور ان اجزاء کا معدہ میں پہونچنا یقینی ہوتاہے لہذا اس کے استعمال سے روزہ فاسد ہوجاتاہے۔ فتاوی محمودیہ -154/10
جو دواء کان یا ناک وغیرہ کے راستے سے معدہ میں پہنچے اس کی وجہ سے صرف روزہ فاسد ہوتاہے، کفارہ واجب نہیں ہوتاہے۔دار الافتاء دار العلوم کراچی بحوالۂ رد المحتار- 402/2
روزہ کی حالت میں آکسیجن لینا : اگر آکسیجن کے ساتھ کوئی دوا نہ ہو تو روزہ فاسد نہیں ہوناچاہئے، کیونکہ یہ سانس لینا ہے اور سانس کے ذریعہ ہوا لینا نہ مفسدصوم ہے اور نہ اس اکل وشراب کا اطلاق ہوتاہے، اگر اس کے ساتھ دواکے اجزاء بھی ہوں تو پھر اس سے روزہ ٹوٹ جائے گا۔جدید فقہی مسائل188/1
৬। শ্বাসকষ্ট বা হাপানী রোগী রোযাবস্থায় শ্বাসকষ্ট দূর করার জন্য মুখের ভিতরভাগে ইনহেলার ব্যবহার করলে রোযা ভঙ্গ হয় । এতে শুধু কাযা ওয়াজিব হয়।
*انہیلر کا استعمال مفسد صوم ہے۔ کتاب النوازل : 386/2، کتاب الفتاوی 394/3
جو دواء کان یا ناک وغیرہ کے راستے سے معدہ میں پہنچے اس کی وجہ سے صرف روزہ فاسد ہوتاہے، کفارہ واجب نہیں ہوتاہے۔دار الافتاء دار العلوم کراچی بحوالۂ رد المحتار: 402/2
৭। পায়খানার রাস্তায় সাপোজিটরি ব্যবহার করলে রোযা ভঙ্গ হয়। এতে শুধু কাযা ওয়াজিব হয়।
پیچھے کے راستہ سے داخل کی گئی چیزاگر موقع حقنہ سے آگے بڑجائے تو روزہ ٹوٹ جاتاہے۔کتاب النوازل 383/2
جو دواء کان یا ناک وغیرہ کے راستے سے معدہ میں پہنچے اس کی وجہ سے صرف روزہ فاسد ہوتاہے، کفارہ واجب نہیں ہوتاہے۔دار الافتاء دار العلوم کراچی بحوالۂ رد المحتار: 402/2
৮। রোযাবস্থায় কানে তৈল বা ওষুধ প্রবেশ করালে রোযা ভঙ্গ হয়। এতে শুধু কাযা ওয়াজিব হয়।
کان میں تیل ڈالنے سے روزہ ٹوٹ جاتاہے۔ (فتاوی دار العلوم417/6
اگر کسی نے اپنے کان میں تیل کوئی اور چیزٹپکائی اور دماغ تک پہنچ گئی تو مفتی بہ قول یہ ہے کہ روزہ ٹوٹ جائے گا۔ (جدید فقہی مسائل 184/11
جو دواء کان یا ناک وغیرہ کے راستے سے معدہ میں پہنچے اس کی وجہ سے صرف روزہ فاسد ہوتاہے، کفارہ واجب نہیں ہوتاہے۔دار الافتاء دار العلوم کراچی بحوالۂ رد المحتار: 402/2
৯। রোযাবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে মুখভরে বমি করলে রোযা ভঙ্গ হয়। শুধু কাযা ওয়াজিব হয়।
البتہ اگر اپنے اختیارسے قئی کی اور بھر منہ ہوئی توروزہ جاتاہے قضاء لازم ہے ۔ مسائل روزہ68
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” مَنْ ذَرَعَهُ قَىْءٌ وَهُوَ صَائِمٌ فَلَيْسَ عَلَيْهِ قَضَاءٌ وَإِنِ اسْتَقَاءَ فَلْيَقْضِ “.رواه أبوداد والترمذى وابن ماجة
অনুবাদ : হযরত আবু হুরায়রা রা. সূত্রে বর্ণিত : তিনি বলেন, রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি রোযা থাকাবস্থায় অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি করে তার জন্য কাযা আদায় করা জরুরী নয়। অবশ্য যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করে তবে সে যেন কাযা আদায় করে।” (আবূ দাউদ শরীফ : হা. ২৩৭২, তিরমিযী শরীফ : হা. ৭২০, ইবনে মাজাহ শরীফ : হা. 1676)
১০। এক ছোলা বা তার চেয়ে বেশি পরিমাণ বমি আসার পর তা গিলে ফেললে রোযা ভঙ্গ হয়। শুধু কাযা ওয়াজিব।
اگرقئی منہ بھر آئی اور ایک چنے کی مقدار یا اس سے زائد عمدا واپس لوٹائی توروزہ ٹوٹ جاتاہے۔ :قضاء فرض ہے کفارہ نہیں ہے ۔ احسن الفتاوی433/4 خير الفتاوى : 66/4
جو دواء کان یا ناک وغیرہ کے راستے سے معدہ میں پہنچے اس کی وجہ سے صرف روزہ فاسد ہوتاہے، کفارہ واجب نہیں ہوتاہے۔دار الافتاء دار العلوم کراچی بحوالۂ رد المحتار: 402/2
১১। কুলি করার সময় গলার ভিতর অনিচ্ছাকৃত পানি ঢুকে পড়লে রোযা ভঙ্গ হয়। এতে শুধু কাযা ওয়াজিব হয়।
*کلی کرتے وقت حلق میں پانی چلاگیا اور روزہ یاد تھا تو روزہ جاتارہا قضاء ہے کفارہ نہیں ۔ بہشتی زیور 206/3
*وان افطر خطأ کان فسبقہ الماء او شرب نائما قضی فقط ۔ درمختار : ص 150
১২। সূর্যাস্তের পূর্বে সূর্য ডুবেগেছে মনে করে ইফতার করলে রোযা ভঙ্গ হয়। এতে শুধু কাযা ওয়াজিব হয়।
غروب آفتاب سمجھ کر افطار کرلیا مگر افطارکے بعد سورج نظر آیا تو اس روزہ کی قضاء لازم ہے کفارہ واجب نہیں ہے ۔ فتاوی دار العلوم 436/6
১৩। ধুমপান করলে রোযা ভঙ্গ হয়। এতে শুধু কাযা ওয়াজিব হয়।
سگریٹ پینے سے روزہ ٹوٹ جاتاہے، کفارہ لازم نہیں ہے۔ آپکے مسائل اور انکا حل 283/3
১৪। মুখে যে কোন প্রকার খাবার রেখে ঘুমিয়ে পড়ে সুবহে সাদিকের পর জাগ্রত হলে রোযা নষ্ট হয়। এতে শুধু কাযা ওয়াজিব।
اگر سوتے وقت منہ میں پان لیکر سوئے اور صبح تک منہ میں رہاتوروزہ جاتارہےگا جس کے منہ میں پان نہ پایاگیا ہو تو ظاہر ہے کہ وہ اس کو نگل گیا ہو اور یہی کہا جائے گا کہ صبح کے بعد نگلاہے تو قضاء واجب ہے۔ امداد الفتاوی 172/1
যে কারণে রোযা ভঙ্গ হয় না
১। রোযাবস্থায় রোযার কথা ভুলে গিয়ে ইচ্ছা মতো পানাহার করলেও রোযা ভঙ্গ হয় না। (বোখারী শরীফ)
عنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِذَا نَسِيَ فَأَكَلَ وَشَرِبَ فَلْيُتِمَّ صَوْمَهُ فَإِنَّمَا◊ أَطْعَمَهُ اللَّهُ وَسَقَاهُ [صححَ البخاری:1933]
حضرت ابو ہریرہ رضی اللہ عنہ سے روایت ہے کہ نبی ﷺ نے فرمایا: اگر کوئی شخص بھول کر کھا پی لے تو وہ اپنے روزے کو پورا کرے کوونکہ اللہ نے اس کو کھلایا اور پلایا ہے۔
فإن اکل الصائم او شرب او جامع ناسیا لم یفطر ۔ (مختصر القدوری : ص ٨٦)
اگر روزہ دار بھول کر کچھ کھالیوے تو اسکا رزہ نہیں گیا۔
(بہشتی زیور :٣/٢٠٤)
২। রোযাবস্থায় চোখে ড্রপ, সুরমা বা মলম ইত্যাদি ব্যবহার করলে রোযা ভঙ্গ হয় না। যদিও এগুলোর স্বাদ গলায় উপলব্ধি হয়। কারণ এবিষয়টি হাদীস শরীফ ও ফিকাহ শাস্ত্রের মূলনীতি দ্বারা প্রমাণিত। (বোখারী শরীফ)
وَقَالَ ابْنُ مَسْعُودٍ إِذَا كَانَ صَوْمُ أَحَدِكُمْ فَلْيُصْبِحْ دَهِينًا مُتَرَجِّلًا …. وَلَمْ يَرَ أَنَسٌ وَالْحَسَنُ وَإِبْرَاهِيمُ بِالْكُحْلِ لِلصَّائِمِ بَأْسًا [صحیح البخاری قبل حدیث:1930]
حضرت عبد اللہ بن مسعود کہتے ہیں کہ جب تم میں سے کوئی روزے کی حالت میں ہو تو وہ تیل لگا سکتا ہے اور کنگھی بھی کر سکتا ہے۔
حضرت انس رضی اللہ عنہ، حسن بصری اور ابراہیم نخعی روزے دار کے لیے سرمہ لگانے میں کوئی حرج محسوس نہیں کرتے تھے۔
اذا ادھن او احتجم او اکتحل لم یفطر ۔ ( مختصر القدوری : ص ٨٧)
دن کو سرمہ لگانا تیل لگانا درست ہے اس سے روزہ میں کوئی نقصان نہیں آئیگا۔ (بہشتی زیور :٣/٣٠٥)
৩। ডায়াবেটিস রোগী রোযাবস্থায় ইনসুলিন ব্যবহার করলে রোযা ভঙ্গ হয় না।
روزہ کی حالت میں انسولین لگانا جائز ہے تو اس اسے کوئی نقصان نہیں ہوگا۔
قال فی النہر لان الموجود فی حلقہ اثر داخل من المنام الذی ھو خلل البدن والمفطر انماھو الداخل من المناقد للاتفاق علی ان من اغتسل فی ماء فوجدہ بردہ فی باطنہ انہ لایفطر ۔
الدرالمحتار علی الرد المختار : ٢/٣٩٥
৪। রোযাবস্থায় কানের মধ্যে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় পানি প্রবেশ করলে রোযা ভঙ্গ হয় না। কারণ, পানি ভিতরে প্রবেশ করতে না পারে মতো মহান আল্লাহ তা’আলা কানের ভিতরভাগে পর্দা ফিট করে দিয়েছেন। হ্যাঁ, কোন কারণে পর্দা যদি ফেটে যায় তখন রোযা ভেঙ্গে যাবে।
کتب فقہ میں مذکور ہےکہ کان میں پانی داخل ہونےسے روزہ فاسدنہیں ہوتا البتہ قصدا کان میں پانی ڈالنا مکروہ ہےاس صورت میں فقہاء کے درمیان فساد وعدم فساد میں اختلاف ہے مگر مفتی بہ قول عدم فساد کا ہے۔ (ولو ا لجیہ :1/218 بحوالہ جواہر الفتاوی : ٥/٤٣٣)
৫। রোযাবস্থায় শরীরে রক্ত নিলে অথবা নিজ শরীর থেকে কাউকে রক্ত দিলে রোযা ভঙ্গ হয় না।
(احسن الفتاوی : ٤/٤٢٥)١) روزہ کی حالت میں بذریعۂ انجکشن خون نکالنا مفسدنہیں ہے۔
٢) اگر کسی نے روزہ کی حالت میں جان بوجھ کر خون دینے سے روزہ نہیں ٹوٹتا ہے۔ ( آپ کے مسائل اور انکا حل : ٣/٢٨٩)
৬। রোযাবস্থায় যে কোন প্রকারের ইনজেকশন কিংবা ইনজেকশনের মাধ্যমে স্যালাইন গ্রহণ করলে রোযা ভঙ্গ হয় না।
(جواہر الفتاوی : ٥/٤٣٧، فتاوی درا لعلوم : ٦/٤٠٨، کتاب الفتاوی :٣/٣٩١)انجکشن سے روزہ نہیں ٹوٹتاہے۔
৭। রোযাবস্থায় নারী-পুরুষে প্রস্রাবের রাস্তায় ওষুধ ইত্যাদি ব্যবহার করলে রোযা ভঙ্গ হয় না। কারণ আধুনিক ডাক্তারী রিপোর্ট মতে সেখান থেকে এমন কোন স্থানে তা পৌঁছেনা যেখানে পৌঁছলে রোযা ভেঙ্গে যায়। তবে মহিলাগণ দিনের বেলায় একাজ না করাই উত্তম।
جدید طبی تحقیق کے مطابق چونکہ عورت کی شرمگاہ اور معدہ اور آنتوں کے درمیان راستہ نہیں ہے اس لیے خواتین کے شرمگاہ میں دوائی رکھنے سے روزہ نہیں ٹوٹے گا تاہم عورت دوادن میں نہ رکھے ،رات کو رکھے توزیادہا حتیاط کی بات ہے اور اگر دن میں رکھ لے تو یہ بہتر ہے ۔
(95دار الافتاء دار العلوم کراچی بحوالۂ ضابطۃ المفطرات : ص )
৮। রোযাবস্থায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য উপরে নিচের কোন রাস্তা দিয়ে ওষুধবিহীন শুধু পাইপ ঢুকালে রোযা ভঙ্গ হয় না।
آج کل معدہ کے بعض امراض کی شناخت کے لئے معدہ تک منہ کے زریعہ نلکی پہنچائی جاتی ہے جوبعض دفعہ گوشت کا ٹکڑا کتراکر اپنے ساتھ لاتی ہے اور اس پر تحقیق ہوتی ہے، ایسی صورت میں اس شخص کا روزہ نہیں ٹوٹے گا۔ (جدید فقہی مسائل :1/186)
(6/369کتاب النوازل )٢) اور اگر خشک نلکی ڈالی جائے تو روزہ فاسد نہ ہوگا۔
৯। রোযাবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে রোযা ভঙ্গ হয় না। তবে যত দ্রুত সম্ভব কুলি ও নাকে পানি দেওয়াসহ সমস্ত শরীর ধৌত করে পবিত্র হওয়ার চেষ্টা করা উচিৎ।
(3/396فتاوی محمودیہ : 10/180، کتاب الفتاوی )احتلام سے روزہ نہیں ٹوٹتاہے۔
১০। রোযাবস্থায় রক্ত পরীক্ষার জন্য শরীর থেকে রক্ত বের করলে রোযা ভঙ্গ হয় না।
(4/425: احسن الفتاوی )روزہ کی حالت میں بذریعۂ انجکشن خون نکالنا مفسدنہیں ہے۔
১১। রোযাবস্থা অনিচ্ছাকৃত যে কোন পরিমাণের বমি আসলে রোযা ভঙ্গ হয় না।
(3/289آپکے مسائل اور انکا حل )قئی اگرخودسے آئے تو روزہ نہیں ٹوٹتاہے۔
১২। রোযাবস্থায় এনজিওগ্রাম করালে রোযা ভঙ্গ হয় না। কারণ উরুর গোড়ার থেকে একটি বিশেষ রগের ভিতর দিয়ে ক্যাথেটার ঢুকিয়ে বিশেষ পদ্ধতির পরীক্ষা করাকে এনজিওগ্রাম বলা হয়। যেহেতু রোযা ভঙ্গের গ্রহণযোগ্য কোন পথ দিয়ে তা প্রবেশ করেনি সেহেতু উক্ত ক্যাথেটারে ওষুধ লাগানো থাকলেও রোযা বঙ্গ হবে না।
( 1/203عالمگیریہ )١) ومایدخل من مسام البدن من الدھن لایفطر۔
٢) والمفطر انماھو الداخل من المنافذ ۔ (ردالمحتار :3/367 )
১৩। রোযাবস্থায় গলায় অনিচ্ছাকৃত ধোয়া, ধুলা-বালি বা মশা-মাছি ইত্যাদি প্রবেশ করলে রোযা ভঙ্গ হয় না।
(3/11عالمگیری :،/1/298 بہشتی زیور )روزہ کی حالت میں حلق کے اندر مکھی، مچھر گرد وغبار چلاجانےسے رورزہ نہیں ٹوٹتاہے۔
১৪। রোযাবস্থায় হিজামাহ করলে রোযা ভঙ্গ হয় না।
اذا ادھن او احتجم او اکتحل لم یفطر ۔ ( مختصر القدوری : ص 87)
যে সকল কারণে রোযা মাকরূহ হয়। ভঙ্গ হয় না
★ মিথ্যা কথা বলা ★ গীবত করা বা চোগলখোরী করা ★ গালাগালি বা ঝগড়া-ফাসাদ করা ★ সারাদিন নাপাক অবস্থায় থাকা ★ রোযার কারণে অস্থিরতা বা কাতরতা প্রকাশ করা ★ কয়লা, মাজন, টুথ-পাউডার, টুথ পেষ্ট বা গুল দিয়ে দাঁত মাঁজা ★ অনর্থক কোন জিনিস মুখের ভিতরে দিয়ে রাখা ★ অহেতুক কোন জিনিস চিবানো বা চেটে দেখা ★ কুলি করার সময় গড়গড়া করা ★ নাকের ভিতরে পানি টেনে নেয়া (কিন্তু পানি গলায় পৌছলে রোযা ভেঙ্গে যাবে) ★ ইচ্ছা কৃত ভাবে অল্প বমি করা।
যে সমস্ত কারণে রোযার কোন ক্ষতি হয় না
★ রোযার কথা ভুলে গিয়ে পানাহার করা ★ আতর – সুগন্ধি ব্যবহার করা বা ফুল ইত্যাদির ঘ্রাণ নেয়া ★ নিজ মুখের থুথু-ক্বফ গিলে ফেলা ★ শরীর বা মাথায় তৈল ব্যবহার করা ★ ঠান্ডার জন্য গোসল করা ★ মিসওয়াক করা ★ ঘুমে স্বপ্ন দোষ হওয়া ★ মুখ ভরে অনিচ্ছাকৃত বমি হওয়া ★ চোখে ঔষধ বা সুরমা ব্যবহার করা ★ যে কোন প্রকার ইনজেকশন কিংবা স্যালাইন নেওয়া ★ শরীর থেকে রক্ত নেওয়া কিংবা শরীরে রক্ত দেওয়ার কারণে রোযা ভঙ্গ হয় না ★ কর্ণে ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় পানি ঢুকে যাওয়া ★ গলায় অনিচ্ছায় ধোঁয়া, ধুলা-বালি বা মশা-মাছি ইত্যাদি ঢুকে যাওয়া।
তারাবীহ-র নামায
★ মাহে রমাযানের ইশার ফরজ ও সুন্নাতের পর বিতরের পূর্বে জামা’আতের সহিত বিশ (২০) রাক’আত তারাবীহ-র নামায পড়া সুন্নাতে কিফায়াহ। মহল্লাহ-র মসজিদে যদি তারাবীহ্-র জামা’আত হয়, তবে কেউ একা তারাবীহ্ আদায় করলে ও সুন্নাত আদায় হবে, অবশ্য এক্ষেত্রে জামা’আতের ছাওয়াব থেকে মাহরূম থাকবে, কিন্তু যদি মহল্লাহর কোথা ও জামা’আত অনুষ্ঠিত না হয় তবে সকল মহল্লাহ বাসী গুনাহ্গার হবে।
★ তারাবীহ-র নামাযে পূর্ণ কুরআন শরীফ অন্তত একবার খতম করা সুন্নাত, কিন্তু খতমে হাফিজ সাহেবের সাথে প্রচলিত পন্থায় কোন প্রকার লেন-দেনের নিয়ম বানিয়ে নেয়া জায়িজ নয়। সম্মানিত হাফিজ সাহেব খালেছ নিয়্যতে একমাত্র আল্লাহ্ তা’আলার সন্তুষ্টির জন্য তারাবীহ্ পড়াবেন, লেন-দেন ব্যতিরেকে হাফিজ না পাওয়া গেলে সূরা তারাবীহ্ পড়বে।
★ তারাবীহ্-র কিছু রাক’আত ছুটে গেলে ও ইমাম সাহেবের সাথে বিতর নামায আদায় করে নিবে। অতঃপর ছুটে যাওয়া নামায একা আদায় করবে।
★ নাবালক ছেলেকে তারাবীহ্-র ইমাম বানানো জায়েয নয়।
লাইলাতুল ক্বদর
লাইলাতুল ক্বদরের দু’আ
اللَّهمَّ إنَّكَ عفوٌّ، تُحِبُّ العفوَ فاعفُ عنِّي.
শবে ক্বদর বা লাইলাতুল ক্বদর একটি অতি মূল্যবান রাত্রি। বছরের সমুদয় রাত্রি গুলোর মধ্যে ফযীলতের দিক দিয়ে এ রাত্রি অন্যতম। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ্ তা’আলা ইরশাদ করেন-লায়লাতুল ক্বদর হাজার মাসের (৮৪ বছর ৪ মাস) চেয়ে উত্তম। এই মূল্যবান রাত্রিকে লুকায়িত রাখা হয়েছে যাতে এই রাত্রির অন্বেষণে একাধিক রাত্রি ইবাদত করে বান্দাগণ আল্লাহ্ তা’আলার নৈকট্য লাভ করতে পারে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- “তোমরা রমাযানের শেষ দশ দিনের বে-জোড় রাত্রিগুলোতে শবে ক্বদর তালাশ কর। (বুখারী শরীফ)
যাকাতের মাসায়িল
কোন সাবালক-স্বজ্ঞান মুসলিম নর-নারীর নিকট ঋণ ও মৌলিক প্রয়োজনের অতিরিক্ত শুধুমাত্র স্বর্ণ থাকলে সাড়ে সাত তোলা, শুধুমাত্র রৌপ্য থাকলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা অথবা উভয়ের কোনটি সমান নগদ টাকা কিংবা ব্যবসায়ী সম্পদ থাকলে অথবা স্বর্ণ রৌপ্য, নগদ টাকা ও ব্যবসায়ী সসম্পদ কোনটি নির্ধারিত নিসাব পরিমাণ না থাকলে ও সর্বপ্রকার মিলে অথবা যে কোন দুইটি মিলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রৌপ্যের সমান হলে এবং উক্ত সম্পদ তার নিকট পূর্ণ এক বছরকাল স্থয়ী থাকে তখন তার উপর উক্ত মালের যাকাত দেওয়া ফরয।
সম্পূর্ণ মালের ৪০ ভাগের একভাগ অর্থাৎ শতকরা আড়াই টাকা হারে যাকাত আদায় করতে হয়। প্রত্যেক বছরই এই নিয়মে যাকাত আদায় করতে হয়।
উল্লেখ্য যে, স্বর্ণের উপর যাকাত ফরয হওয়ার জন্য সাড়ে সাত তোলা পরিমাণ হতে হবে যদি সাথে অন্য কোন প্রকারের সম্পদ না থাকে।
নির্ধারিত নিসাবের কম পরিমাণ স্বর্ণ এর সাথে অন্য কোন সম্পদ যদি থাকে তখন মিশ্রিত সম্পদের নিসাব ধরা হবে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রৌপ্যের মূল্য পরিমাণ।
ফিতরার মাসায়েল
★ কোন মুসলমান যদি ঋণ ও মৌলিক প্রয়োজনের অতিরিক্ত উপরোল্লিখিত যাকাতের নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয় তবে তার উপর সদকা-ই- ফিতর ওয়াজিব, উল্লেখ থাকে যে সদকা-ই ফিতর ওয়াজিব হওয়ার জন্য উক্ত সম্পদ কোন নির্ধারিত কাল পর্যন্ত স্থায়ী হওয়া জরুরী নয়।
★ প্রত্যেক সাহেবে নিসাব ব্যক্তির উপর তার নিজের এবং স্বীয় নাবালক দরিদ্র সন্তানের পক্ষ থেকে ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব। তবে নাবালক সন্তানের যদি নিসাব পরিমাণ নিজস্ব সম্পদ থাকে, তা হলে তার ফিতরা তার সম্পদ থেকে আদায় করতে হবে।
★ ঈদের দিন নামাযে যাওয়ার পূর্বে ফিতরা আদায় করে দেওয়া উত্তম। যদি নামাযের পরে অথবা ঈদের দিনের পূর্বেই আদায় করে দেয় তাতে কোন অসুবিধা নেই ।
★ নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে রোযা রাখতে না পারলে ও তার উপর ফিতরা ওয়াজিব ।
★ প্রত্যেক ব্যক্তির ফিতরা বাবত পৌনে দুই কেজি গম বা তার মূল্য আদায় করতে হয়। তবে সাবধানতা মূলক র্পূণ দুই কেজি কিংবা তৎ মূল্য প্রদান করাই উত্তম।
★ একজনের ফিতরা একই ব্যক্তিকে অথবা অল্প অল্প করে কয়েক ব্যক্তিকে দেওয়া জায়েয। অনুরূপ ভাবে কয়েক জনের ফিতরা একই ব্যক্তিকে দেওয়া জায়েয।
ঈদুল ফিতরের নামাযের নিয়ম
প্রথমে এভাবে নিয়্যত করবে যে, ‘আমি ঈদুল ফিতরের দু’রাকা’আত ওয়াজিব নামায অতিরিক্ত ছয় তাকবীরের সাথে কিবলামুখী হয়ে এই ইমামের পিছনে আদায় করছি’ অতপর আল্লাহু আকবর বলে হাত বেঁধে পূর্ণ সুবহানাকা পাঠ করতঃ তিন বার আল্লাহু আকবর বলবে প্রত্যেক বারে দুহাত কান পর্যন্ত তুলবে এবং প্রতি বারের পর তিনবার সুবহানাল্লাহ্ পড়া যায় মত সময় বিরতি দিবে তৃতীয়বারে হাত নামিয়ে নাভির নিচে বেঁধে নিবে অতপর ইমাম সাহেব আউযুবিল্লাহ্-বিসমিল্লাহ্ পাঠ করে সূরা ফাতেহা শুরু করবেন এবং যথা নিয়মে প্রথম রাকা’আত শেষ করবেন। দ্বিতীয় রাকা’আতে সূরা কিরাত শেষ করে রুকুতে যাওয়ার পূর্বে উপরোক্ত নিয়মে আবার তিন বার আল্লাহু আকবর বলবে এবং তৃতীয় বারে হাত ছেড়ে দিয়ে আরেক বার আল্লাহু আকবর বলে রুকুতে যাবেন। এছাড়া অন্য নামাযের সাথে আর কোন ফারাক নেই।
যাকাত -ফিতরার হকদার
যাদের সাথে দাতার জন্মগত সম্পর্ক আছে, যেমন পিতা-মাতা,দাদা -দাদীও নানা-নানী এবং দাতার সাথে যাদের জন্মগত সম্পর্ক আছে যেমন ছেলে-মেয়ে, নাতী-নাতনী ইত্যাদি, তাদেরকে যাকাত ফিতরা দেয়া যায়না। অমুসলিম কিংবা মুসলিম ধনী ব্যক্তি কে দান করলেও যাকাত ফিতরা আদায় হবে না। এমন মুসলমান গরীব- মিসকীনকে যাকাত ফিতরা দিতে হবে, যার নিসাব পরিমাণ মাল নেই। যাকাত ফিতরা জন্মসুত্রে আত্মীয় স্বজনের পাশাপাশি দরিদ্র ধর্মীয় স্বজনকে দিলেও ধর্ম রক্ষার সহযোগিতা হিসাবে দ্বিগুণ ছাওয়াবের অধিকারী হওয়া যায়।
————–+—————–
সংকলনে,
মুহাম্মদ কিফায়তুল্লাহ শফিক
ইসলামিক রিাসার্চ সেন্টার কক্সবাজার