বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম
ব্যবহারের স্বর্ণে যাকাত আসবে কিনা?- বিষয়টি নিয়ে ইমামগণের মধ্যে মতপার্থক্য থাকলেও অগ্রগণ্য ও বিশুদ্ধ অভিমত হলো- ব্যবহারের স্বর্ণেও যাকাত আসবে, যদি তা নিসাব পরিমাণ হয়। (শাইখ ইবনু বায ও শাইখ সালিহ আল মুনাজ্জিদ)
যদি ধরেও নিই যে, ব্যবহারের স্বর্ণে যাকাত আসবে না, তাহলে প্রশ্ন হলো- সাধারণ ব্যবহারের জন্য কতটুকু স্বর্ণের প্রয়োজন হয়? একজন মধ্যবিত্ত কিংবা উচ্চবিত্ত পরিবারের মহিলার সাধারণ ব্যবহারের জন্য কি ৪০ ভরি স্বর্ণ লাগে? এ উদাহরণ দেওয়া কতটুকু যুক্তিযুক্ত?
উল্লেখ্য, যে মহিলার ৪০ ভরি ব্যবহারের স্বর্ণ থাকবে, তার তো যাকাত আদায় করার মতো অর্থকড়ির অভাব থাকার কথা নয়। এগুলো বিক্রি না করেও স্বাচ্ছন্দ্যে যাকাত আদায় করার মতো আর্থিক সক্ষমতা তার যে থাকবে- তা বলাই বাহুল্য।
অধিকন্তু, যে স্বামী তার স্ত্রীকে ৪০ ভরি স্বর্ণ দিতে পারে, সেই স্বামীর জন্য স্ত্রীর পক্ষ থেকে এসব স্বর্ণের যাকাত দেওয়াও কষ্টকর কোনো বিষয় হবার কথা নয়। শাইখ ইবনু বায (রাহ.) বলেন,
والزكاة على مالكة الحلي ، وإذا أداها زوجها أو غيره عنها بإذنها فلا بأس ، ولا يجب إخراج الزكاة منه ، بل يجزئ إخراجها من قيمته
‘‘গহনার অধিকারিণী মহিলার ওপর যাকাত আসবে। তবে যদি তার পক্ষ থেকে তার স্বামী কিংবা অন্য কেউ তার অনুমতিক্রমে যাকাত আদায় করে দেয় তাতেও কোনো অসুবিধা নেই। উপরন্তু, গহনার যাকাত তার মালিকানাধীন স্বর্ণ থেকেই বের করতে হবে- তা আবশ্যক নয়; বরং তার মূল্য হিসেব করেও যাকাত দেয়া যায়।”
কাজেই চল্লিশ ভরি হলেও যাকাত আসবে না- উদাহরণটি অতিরিক্ত হয়ে গেলো না তো? তা ছাড়া এরূপ ফাতওয়া থেকে সুযোগসন্ধানীরা সুবিধা গ্রহণের যে চেষ্টা করবে- তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
সুতরাং কেউ যদি (যাকাত থেকে বাঁচার উদ্দেশ্যে!) নিজের স্ত্রীর ব্যবহারের জন্য তাকে এ পরিমাণ স্বর্ণ দান করে, তাহলে কী হুকুম হবে? অথবা কোনো মহিলা যদি (যাকাত থেকে বাঁচার উদ্দেশ্যে!) তার অঢেল অর্থ-সম্পদ থেকে ব্যবহারের কথা বলে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কার জমা করে রাখে তার কী হুকুম হবে?
আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সকলকে দীনের সঠিক সমঝ দান করুন!! আমীন!
———–
সংগৃহীত, ডক্টর আহমদ আলী সাহেব এর আইডি থেকে Ahmad Ali